কলকাতা : শহরের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে এক মনোজ্ঞ সন্ধ্যার সাক্ষী রইল রবীন্দ্রসদন, যেখানে অনুষ্ঠিত হল শাস্ত্রীয় নৃত্য প্রশিক্ষণ সংস্থা ‘কলাক্ষেত্রম’-এর ৩৭ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বার্ষিক অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল গুরু ডঃ শুভাশিষ ভট্টাচার্য ও গুরু সুস্মিতা ভট্টাচার্যের নিখুঁত পরিকল্পনা ও সৃজনশীল নির্দেশনায়।
সন্ধ্যার প্রথম ভাগে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতিনাট্য ও নৃত্যনাট্য অবলম্বনে বিশেষ নৃত্য-উপস্থাপনা “রবি গানের রসের ধারায়”। এটি ছিল কবিগুরুর সৃষ্টিতে নিহিত নয়টি রসের মধ্য থেকে বাছাই করা সাতটি রসের সংকলনে নির্মিত এক মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশনা, যা দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়।
পরবর্তী পর্বে শতবর্ষে সংগীত পরিচালক সলিল চৌধুরীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মঞ্চস্থ হয় “আলোর পথযাত্রী”—তাঁর গান ও কবিতার ছোঁয়ায় নির্মিত এক গভীর ভাবনার নৃত্য সংকলন। উভয় পরিবেশনার নৃত্য নির্দেশনায় ছিলেন স্বয়ং গুরু ডঃ শুভাশিষ ভট্টাচার্য ও গুরু সুস্মিতা ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠানটির সূক্ষ্ম সংকলন ও মননশীল সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বাচিক শিল্পী মেঘনা নন্দী ও শান্তনু গঙ্গোপাধ্যায়।
এই বিশেষ সন্ধ্যায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক দেবাশীষ কুমার, বিশিষ্ট শিল্পী দেবযানী কুমার, কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী পূর্ণিমা ঘোষ, বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী পলি গুহ, ওরিয়েন্ট জুয়েলার্স-এর ডি.জি.এম. সুস্মিতা দাস চৌধুরী, দেবপ্রিয় চক্রবর্ত্তী, পূজা মজুমদার, হৈমন্তী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে তাঁদের গুরুদের—ডঃ শুভাশিষ ভট্টাচার্য ও সুস্মিতা ভট্টাচার্যের—একই মঞ্চে নৃত্য পরিবেশনা, যা অনুষ্ঠানকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়।
এই অনবদ্য সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা দর্শকদের হৃদয়ে স্থায়ী ছাপ ফেলে যায়, এবং প্রমাণ করে দেয়—কলাক্ষেত্রম শুধুমাত্র একটি প্রশিক্ষণ সংস্থা নয়, এক সাংস্কৃতিক পরিবার, যারা শাস্ত্রীয় শিল্পচর্চার পরম্পরাকে সম্মান জানিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
